সোমবার, ১ এপ্রিল, ২০২৪

ভয়ঙ্কর ফাঁদ : একটি পিলে চমকানো প্রতারণার গল্প


বার নাবিলা ঢাকা ভার্সিটিতে চান্স পাওয়ায় কিছুদিন ধরে সে একটি মেসে উঠেছে। সে গ্রামের মেয়ে। খুবই মেধাবী আর সহজ-সরল হৃদয়ের অধিকারী। গ্রামের সাধারণ নারী-পুরুষ জানেনা ঢাকার ইট-পাথরের দালানে থাকা মানুষদের হৃদয় কতটা পাষাণ, ধূর্ত আর ভয়ঙ্কর। নাবিলা নিয়মিত ভার্সিটিতে ক্লাস করে। তার মেসটা ভার্সিটি থেকে সামান্য দূরে। তাই সে পায়ে হেঁটেই ভার্সিটিতে আসা-যাওয়া করে।


একদিন নাবিলা ভার্সিটিতে যাওয়ার পথে দেখে রাস্তার পাশে একটি শিশু চিৎকার করে কাঁন্নাকাটি করছে কিন্তু তাকে কেউ কোনকিছু জিজ্ঞেস করছে না বা তাকে তার অভিভাবকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে না। এটা দেখে সে খুবই মর্মাহত হয় এবং শিশুটির কাছে এগিয়ে যায়। তারপর শিশুটিকে জিজ্ঞেস করল, তুমি কান্না করছ কেন? তোমার বাবা-মা কোথায়? শিশুটি রাস্তার বিপরীত পাশের একটি ছোটমতো বিল্ডিং দেখিয়ে বলে ওটাই আমাদের ঘর, আমি রাস্তা পার হতে পারছি না,দয়াকরে আমাকে বাড়িতে পৌঁছে দিন। 


নাবিলা শিশুটিকে নিয়ে রাস্তা পার হয়ে তার বাড়ির দিকে চলল শিশুটিকে তার পিতা-মাতার কাছে পৌছে দিতে। দরজার কাছে গিয়ে সে নক করে। কিছুক্ষনের মধ্যেই দরজা খুলে যায় এবং একটি মধ্য বয়স্ক লোক দরজা খুলে মুখে বিরক্তি ভাব ফুটিয়ে ছেলেটিকে জড়িয়ে ধরে বলে উঠে কোথায় ছিলে বাবা এতক্ষণ? তোমার জন্য আমি পেরেশান হয়ে আছি!


তারপর নিজেকে যেন একটু সামলে নেয় এবং নাবিলাকে বলেÑ আপনি আমাকে বড়ই উপকার করলেন। এ ঋণ আমি কখনোই শোধ করতে পারবো না। এজন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ! আসুন, আসুন ভেতরে আসুন! একটু চা-নাস্তা করে যান। একথা বলেই ভেতরের দিকে রাওয়ানা দেয়। নাবিলা ভেতরে যেতে ইতস্তত বোধ করছে। লোকটি ঘাড় ফিরিয়ে নাবিলার দিকে তাকিয়ে বলে, আরে আপনি আমার উপকার করলেন আর আমি একটু চা-নাস্তাও করাতে পারবো না তা কি হয়! আসুন, আসুন অন্তত একটা চা খেয়ে যান। গ্রামের সহজ-সরল মেয়ে নাবিলা লোকটির অনুরোধ আর ফেলতে পারে না। কিন্তু সে জানেনা, ভেতরে প্রবেশ করলে কী ভয়ঙ্কর পরিস্থি তার জন্য অপেক্ষা করছে!


সে ঘরে প্রবেশ করে সোফায় গিয়ে বসে। ইত্যবসরে বাইরে থেকে কেউ একজন এসে দরজাটা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেয়। দরজা বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে লোকটি ফিক করে হেসে উঠে। লোকটির হাসি দেখে নাবিলার শরীরটা ভয়ে শিউরে উঠে। সে দৌড়ে গিয়ে দরজার হাতল ধরে টান দেয়। কিন্তু না, সে খুব দেরী করে ফেলেছে। লোকটি বলে উঠে, টানাটানি করে লাভ নেই, দরজা বাইরে থেকে বন্ধ হয়ে গেছে। 


তারপর বলল, আপনার কাছে যা আছে সব বের করুন। এই বলে লোকটি এগিয়ে এসে তার হাতব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়। এরপর ব্যাগের ভেতর থেকে মোবাইল এবং টাকা পয়সা যা ছিল সব নিয়ে নেয়। তারপর লোকটির চোখেমুখে শয়তানী হাসি খেলে গেল। নাবিলা এটা বুঝতে পেরে চিৎকার করে বলে উঠল, না! না! এমনটি করবেন না, প্লিজ! আমাকে ছেড়ে দিন ! ছেড়ে দিন! কিন্তু কে শোনে কার কথা, লোকটি নাবিলার হাত ধরে টানতে টানতে বিছানায় নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিল।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন