বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫

হাদিস অস্বীকারকারীর অহমিকা চূর্ণকারী প্রশ্ন


ভূমিক: অনেকে ‍বুক ফুলিয়ে বলে, আমি একমাত্র কুরআনকেই মানি, হাদিস মানিনা। হাদিস আবার কোথা থেকে এলো? কুরআনই তো হাদিস! আল্লাহ তো নিজেই বলেছেন, “আমি এই কিতাবে কোনকিছু বাদ রাখিনি” তাহলে হাদিস মানতে হবে কেন? এরকম আহমকি যুক্তি দিয়ে থাকে। অথচ তারা জানে না, একথার দ্বারা নিজেদেরকে তারা কতটা অবাস্তব, অযৌক্তিক, ভ্রষ্ট আর বুকা প্রমাণ করছে। চলুন আলোচনার মাধ্যমে তাদের অহমিকার অসাড়তা দেখে নিই-

কিছু সাধারণ প্রশ্নঃ 

প্রশ্ন- ১ঃ  আচ্ছা, আপনারা কি শুধু হাদিসকেই বিশ্বাস করেন না? নাকি লিখিত অতীত কোন ইতিহাসকেই বিশ্বাস করেন না? যদি অতীতে লেখা কোনকিছুকেই বিশ্বাস না করেন তাহলে এক্ষেত্রে আমার বলার কিছু নেই। আর যদি বলেন শুধুমাত্র হাদিসে বিশ্বাস করেন না সেক্ষেত্রে আমার আপত্তি আছে।

কেননা, হাদিস যেমন আল্লাহ তায়ালা নিজ হাতে সংরক্ষণ করেনি, তেমনি ইতিহাসের কোন বইও সংরক্ষণ করার ওয়াদা করেননি। তাছাড়া এগুলোতে প্রতিটি লেখকের নিজস্ব মনগড়া কিছু ব্যাখ্যা কিংবা নিজ দেশ বা জাতির পক্ষে পক্ষপাতদুষ্টি যুক্ত হয়েছে যা বাস্তবতার সাথে নাও মিলতে পারে। এখন প্রশ্ন হলো-  তাহলে কেন শুধুমাত্র হাদিসকে অস্বীকার করছেন? আর কেনই বা ইতিহাস বিশ্বাস করছেন? ব্যাখ্যা দিতে পারেবেন?

আর যদি লিখিত কোন অতীত ইতিহাসকে বিশ্বাস না করেন তাহলে আপনাদের যেকোন কথার ব্যাখ্যা হিসেবে অতীতের কোন ঘটনা বা ইতিহাসকে টেনে আনা কি ঠিক হবে? কিন্তু বাস্তবে তো আপনারা তা করছেন?

প্রশ্ন- ২ঃ আপনার হাদিসে অবিশ্বাসের কারণ হলো এটা আল্লাহ সংরক্ষণের ওয়াদা করেন নি এবং মানুষের দ্বারা লিখিত এবং সংরক্ষিত হয়েছে। অর্থাৎ কোন মানুষকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না। আপনি জানেন যে, সকল মানুষই কমবেশ মিথ্যা কথা বলে এমনকি আপনার পিতা-মাতাও। তাছাড়া অনেক নারী-পুরুষ আছে যারা তার স্বামী বা স্ত্রীর আড়ালে গুপনে পরকিয়া করে বেড়ায়। এখন প্রশ্ন হলো- আপনি যে বৈধ সন্তান একথা দাবী করার কী ভিত্তি আছে বিশ্বাস ছাড়া? আপনার হাতে প্রমাণ আছে কি?

কিছু ইসলামী প্রশ্নঃ

প্রশ্ন- ১ঃ আপনি যদি হাদিস অস্বীকার করেন তাহলে কিভাবে প্রমাণ করবেন যে, রাসূল (সাঃ) এর চারজন বিশিষ্ট সাহাবী ছিল। তাছাড়া আপনি কিভাবে প্রমাণ করবেন যে, রাসূলের একজন বিশিষ্ট সাহাবীর নাম আবু বকর (রাঃ) এবং তিনি ছিলেন ইসলামের প্রথম খলিফা? নাকি আবু বকর, ওমর, ওসসমান ও আলী (রাঃ) প্রমূখ সাহাবীদেরকে অস্বীকার করেন? যেহেতু তাদের নাম কুরআনে নেই!!?

প্রশ্ন-২ঃ আল্লাহ তায়ালা নিজে কুরআন তিলাওয়াত করে আপনাকে শুনাননি। আবার তিনি আপনাকে পাথরে বা কাগজে লিখেও দেননি। আপনার হাতে যেই কুরআনটি আছে এই কুরআন যুগ যুগ ধরে মানুষই লিখেছে এবং সংরক্ষণ করেছে। এখন আপনি কি আল্লাহর কাছ থেকে সেই কিতাবটি এনে দেখাতে পারবেন যেটা তিনি নিজে লাওহে মাহফুজে সংরক্ষণ করে রেখেছেন?

তা না হলে কিভাবে যাচাই করবেন যে, মানুষের দ্বারা লিখিত এবং সংরক্ষিত এই কুরআনটি অবিকৃত এবং অপরিবর্তিত রয়েছে?  কারণ আপনাদের ধরণা মুসলিমরা বিশ্বস্ত নয়, তারা মিথ্যা হাদিস তৈরি করেছে। সুতরাং যারা মিথ্যা হাদিস তৈরি করতে পারে তাদের হাতে কুরআন কিভাবে অপরিবর্তিত থাকবে?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন