শুরুকথাঃ অনেকের মনেই একটা বদ্ধমূল ধারণা তৈরি হয়ে আছে যে, মাদরাসার ছাত্ররা খুব খারাপ হয়। কিন্তু কেন? মাদরাসায় কি একজন ছাত্রকে খারপ হতে উৎসাহ প্রদান করা হয়? নাকি আমাদের মানষিকতা তথা সমাজই এর জন্য দায়ী? এর জবাব অনেকের কাছেই অজানা। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলেও সত্য যে, সাধারণ মানুষ এসব চিন্তা না করে পরোক্ষভাবে মাদরাসা তথা দ্বীনী প্রতিষ্ঠানের প্রতিই বিদ্বেষ পোষণ করে থাকেন।
তবে আজকের আলোচনায় আমি প্রমাণ
করে দেখাবো যে, একজন মাদরাসা পড়ুয়া ছাত্র খারপ হওয়ার পিছনে মূলত মাদরাসা বা মাদরাসার
শিক্ষকগণ দায়ী নন বরং আমাদের সমাজ তথা আমরা নিজেরাই দায়ি। কথাটি শুনতে অবাক লাগলেও
বাস্তবতা তা-ই। নিচের যুক্তিপূর্ণ লেখাটি পড়লে আপনিও কথাটি স্বীকার করতে বাধ্য হবেন।
তাহলে চলুন কারণগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করি-
আমাদের অবিবেচক সিদ্ধান্ত: আমাদের সমাজের মানুষেরা সাধারণত তার মেধাবী ছাত্রকে কখনোই
মাদরাসায় পড়াতে চায় না। কারণ তার সন্তানটি মেধাবী হলে দুনিয়াতে তাকে প্রতিষ্ঠিত করতে
নিজের জান প্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে এবং তার পিছনে বেহিসেবী খরচ করতেও কুন্ঠাবোধ
করে না।
কিন্তু তার অপর সন্তানটিই যদি
খুব দূর্বল মেধার অধিকারী হয় অথবা এমন বেপরোয় এবং একরোখা হয় যে তার সাথে কোনভাবেই পিতা-মাতা
এবং এবং স্কুলের টিচারগণ পেরে উঠে না ঠিক তখনই টিচারগণ তাকে মাদরাসায় ভর্তি করিয়ে দেওয়ার
পরামর্শ প্রদান করেন অথবা পিতা-মাতা তাকে মাদরাসায় ভর্তি করিয়ে আপদকে দূরে রাখার চেষ্টা
করে।
চিন্তা করে দেখুন যেই সন্তানের
সাথে পিতা-মাতা এবং স্কুলের শিক্ষকগণ পেরে উঠতে পারলো না সেই ছাত্রটিকে মাদরাসায় ভর্তি
করিয়ে এই খারাপের দায়ভার আবার মাদরাসার উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা কি আমাদের অবিবেচক
সিদ্ধান্ত তথা একচোখা দৃষ্টিভঙ্গি নয়? বরং অনেক সময়ই দেখা যায়, যে সন্তানের সাথে পিতা-মাতা
এবং স্কুলের শিক্ষকেরা পেরে উঠলো না, মাদরাসায় ভর্তি করানোর পর সেই ছাত্রটিই বেশ অনুগত
এবং ভদ্র হয়ে উঠে।
এখানে মাদরাসার শিক্ষকদের কতবড়
মেহনত এবং কষ্ট স্বীকার করতে হয় তা হয়তো কখনোই ভাবার সুযোগ আমাদের হয় না। ব্যপারটি
খুবই দুঃখজনক হলেও বাস্তবতা এটাই। একজন সুস্থ মানুষ এই বিষয় নিয়ে চিন্তা করলে মাদরাসা
তথা দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের প্রতি কৃতজ্ঞতায় নতজানু হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবতা হলো আমরা
উল্টো দুষারোপ করে থাকি।
উপসংহার: তুলনামূলক
মাদরাসার শিক্ষাব্যবস্থা সহজ এবং কম ব্যয়বহুল। তাছাড়া এই মাদরাসাগুলো থেকেই তৈরি হয়
দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী, মিজানুর রহমান আজহারী, নূরুল ইসলাম ওলিপুরি, ড. এনায়েতুল্লাহ
আব্বাসী, আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসূফ, মোজাফফর বিন মুহসিন এবং দ্বীনদার বড় বড় আলেম। যদি
এখানে আপনার মেধাবী ছাত্রটিকে ভর্তি করিয়ে দেন তাহলে সেই ছাত্রটিই একদিন দেলোয়ার হোসাইন
সাইদী বা মিজানুর রহমান আজহারী হয়ে বের হবে এবং মাদরাসার দূর্নাম দূরীভূত হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন