ড. আদিলের মুখে আনন্দের আভা ফোটে উঠলো। ড. আদিল সাহেব সুদীর্ঘ দশ বছর যাবৎ পিপড়ার উপর গবেষণা চালিয়েছেন। তার গবেষণার বিষয় ছিল- কিভাবে পিপড়ার জাতকে বড় করা যায়। এর পিছনে তার বিশাল উদ্দেশ্য লুকায়িত রয়েছে। পিপড়াকে যদি অন্তত বকরির সাইজে বড় করা যায় তবে এর দ্বারা মানব সমাজ অকল্পনীয় সুবিধা ভোগ করতে পারবে। যেমন- পিঁপড়া এমন এক শক্তিশালী প্রাণী যা তার চেয়ে অন্তত দশগুণ বেশি ওজন বয়ে নিয়ে যেতে পারে।
আর যদি এর উপর সরাসরি বোঝা না চাপিয়ে চাকাযুক্ত গাড়ি সংযুক্ত করা যায় তবে কতগুণ ওজন বয়ে নিতে পারবে ভাভা যায়! তাছাড়া পিঁপড়ার চোয়াল এতই শক্তিশালী যে, যদি একটি পিপড়াকে বিড়ালের সাইজেও কল্পনা করা যায় তবে সেটির চোয়ালের শক্তি এত পরিমাণ বেড়ে যাবে যে, সেই পিঁপড়া অনায়াসেই লোহাকেও কামড়িয়ে টুকরা টুকরা করতে পারবে।
সুতরাং মানুষের দৈনন্দিন কাজে এক ধরনের বিপ্লব সাধিত হবে। তাছাড়া বিদুৎ ও জ্বালানির বিকল্প শক্তি হিসেবেও পিপড়াকে ব্যবহার করা যাবে। একটি ছোট্ট পিপিলিকার যে গতি যদি তাকে বকরির আকারে বড় করা যায় তার গতি হবে সমসাময়িক ইঞ্জিন চালিত ছোটখাটো গাড়ির মতো। তাছাড়া এর আরও উপকারী দিক রয়েছে। পিঁপড়া নিজের খাবার নিজেই সরবরাহ করে থাকে এবং নিজের খাবার দীর্ঘদিনের জন্য সংগ্রহ করে রাখতে পারে। আবার এর জন্য কষ্ট করে গৃহ নির্মাণ করারও প্রয়োজন নেই।
কেননা পিঁপড়া গর্ত করে নিজের থাকার জায়গা নিজেই বানিয়ে নিতে পারে। তাছাড়া পিঁপড়ার সংখ্যাই পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি। এর কারণ পিঁপড়া দ্রুত বৃদ্ধি পায়। যেকারণে একবার পিঁপড়ার জাত বড় করতে পারলে সেই পিঁপড়াই তার সদস্য সংখ্যা ইচ্ছামতো বাড়িয়ে নিতে পারবে। এসব সুবিধার কথা চিন্তা করে ড. আদিল সুদীর্ঘ দশটি বছর পিঁপড়াকে নিয়ে নিবিড় গবেষয়ণায় মনোনিবেশ করেছিলেন, কী করে পিপড়ার ডিনএনএ’র মধ্যে পরিবর্তন সাধিত করে এর জাত পর্যায়ক্রমে বড় করা যায়। তাহলে বুঝতেই পারছেন কেন ড. আদিল আজ এত খুসি?
এক মাস পর…
ড. আদিল আজ তার গবেষণায় সফল হয়েছেন। তিনি পিড়ার একটি জাত তৈরি করেছেন যা বকরির সাইজের মত বড়। তিনি পৃথিবীর প্রথম ব্যক্তি হিসেবে পিঁপড়ার বাহন তৈরি করে তাতে সোওয়ার হয়েছেন। প্রথমে পিঁপড়ার সাইজ দেখে তা চিনতে না পেরে মানুষ ভয়ে চিৎকার চেচামেচি করে পালাতে শুরু করল। তারপর মানুষ ড. আদিলকে দূর থেকে দেখে করতালি দিয়ে অভিভাদন জানালো। একসময় সাংবাদিকরা ছোটে আসলো রিপোর্ট করতে
এ নিয়ে দেশের মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হলো। দূর দূরান্ত থেকে মানুষ এক নজর দেখার জন্য ছোটে আসতে থাকলো। এই খবর দেশ থেকে দেশান্তরে পৌঁছে গেলো। বিশ্বের বড় বড় সব মিডিয়ায় তার আবিষ্কারটি ফলাও করা প্রচার করা হচ্ছে। তিনি আজ একজন সফল গবেষক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন