বৃষ্টি
আল্লাহ তায়ালার এক অপার নিয়ামত।
আজকাল যদিও আমরা বৃষ্টির গুরুত্ব তেমন উপলব্ধি করতে পারি না তথাপিও বৃষ্টি যে ফসলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ তা স্বীকার করতে বাধ্য।
কিন্তু অতীতের মানব সভ্যতা এই বৃষ্টির গুরুত্ব হাড়ে হাড়ে টের পেতো।
তখনকার দিনে আজকের আধুনিক সময়ের মতো ছিলনা সুপেয় পানির ব্যবস্থা ও উদ্ভাবন।
ফসল ফলানো থেকে শুরু করে খাবারের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে বৃষ্টির মুখাপেক্ষী ছিল।
তাই এই বৃষ্টি পাওয়ার জন্য কত রকমের কুসংস্কার ও রসম রেওয়াজ চালু ছিল তার কোন ইয়ত্যা নেই।
যাই হোক, আজও বৃষ্টির সৃষ্টি ও এর
প্রতিটি ধাপ বিজ্ঞানীদের কাছে বিস্ময়কর।
বৃষ্টি
গঠনে
বিজ্ঞানের
বিস্ময়:
আপনি যদি লক্ষ করেন বৃষ্টি কিভাবে তৈরি হয় তবে আপনি অবাক হতে বাধ্য হবে।
প্রতিদিন পৃথিবীর খাল-বিল, সমুদ্র ও নদী-নালা থেকে
লক্ষ লক্ষ গ্যালন পানি বাষ্প হয়ে আকাশে জমছে।
বাষ্পের প্রতিটি কণা এতই ক্ষুদ্র যে, এর মধ্যে
পানি ছাড়া কোন রোগ জীবাণু এবং ময়লার ছিটেফোটাও থাকে না।
অর্থাৎ বাষ্পের প্রতিটি কণা বিশুদ্ধ ও রোগজীবাণু মুক্ত থাকে।
আমরা পানিকে বিশুদ্ধ করার জন্য কত রকমের উদ্ভাবনই তো দেখেছি।
কিন্তু আল্লাহ তায়ালা প্রকৃতির এই বাষ্পীকরণে এমন এক বিজ্ঞান রেখেছেন যে, আজও পৃথিবীতে সবচেয়ে বিশুদ্ধ পানি হিসেবে বৃষ্টির পানিকেই বিবেচনা করা হয়। কেননা উটিউবেওয়েলের পানিতে সামান্য হলেও আর্সেনিক থেকেই যায়।
যন্ত্র দ্বারা বিশুদ্ধ করা হলেও তা যে ১০০% বিশুদ্ধ নয় এটা
সবারই জানা।
কিন্তু বৃষ্টির পানি এর ব্যতিক্রম- বাষ্পাকারে যেই কণাগুলো মেঘ হয়ে আকাশে জমে তা ১০০% খাটি পানি।
কিন্তু বৃষ্টি পড়ার সময় বাতাসে মিশে থাকা ময়লার সাথে লেগে কিছুটা ময়লাযুক্ত হতে পারে।
জন্যই প্রাথমিক বৃষ্টির সময় বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করার উচিত নয়।
বৃষ্টি
ও
পরিচ্ছন্নতা: বিজ্ঞানীরা বলেন পৃথিবীতে কোন স্থানই শুন্য নয়।
বরং যেখানিই আমরা খালি জায়গা বা ফাঁকা স্থান দেখিনা কেন তা মূলত বাতাস দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে।
তাই প্রকৃত অর্থ তা ফাঁকা বা খালি নয়।
যদি বাতাসকে পানির মতো কল্পনা করা হয় তবে আমরা দেখবো যে, আমরা সবাই এমনকি পৃথিবীর সবকিছুই বাতাসের মধ্যে ডুবন্ত অবস্থায় আছে।
আর এই বাতাস বয়ে বেড়াচ্ছে অসংখ্য ধুলা-বালি আর কোটি কোটি রোগ জীবাণু। এই ধুলাবালি আর রোগ জীবাণু বাতাসে ভর করে গাছপালা, ফুল-ফল ইত্যাদিতে
ছড়িয়ে ছিটিয়ে লেগে থাকে। আর বৃষ্টি এই ধুলা-বালি আর রোগ জীবাণুকে বাতাস, গাছাপালা এবং খোলা সব জায়গা থেকে ধুয়ে মুছে
একদম পরিষ্কার করে দেয়।
বৃষ্টি
ও
ফসল: যদিও এখন পৃথিবীর মানুষ পানি সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক মেশিন ও যন্ত্রাংশ আবিষ্কার করেছেন, তথাপিও বৃষ্টির পানির বিকল্প নেই।
বৃষ্টির ফলে ফসলের মান যত উন্নত হয় কৃত্রিম সেচের মাধ্যমে সেই মানের ফসল উৎপাদন করা কখনোই সম্ভব নয়।
শেষকথা:
বৃষ্টি মহান আল্লাহ তায়ালার এক বিরাট নিয়ামত। তাই উপকারী বৃষ্টি বর্ষণের জন্য
আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া করা উচিত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন