টয়লেট ব্যবহারে সতর্ক ও সাবধান না হলে মাঝে মাঝে আপনাকে লজ্জাকর অবস্থায় পড়তে হবে। আজকে আমি আপনাদের সামনে এমন কিছু বিষয় সামনে আনবো যেগুলো অনুসরণ করলে এমন কিছু সমস্যা মোকাবেলা করতে পারবেন- যা ইতিপূর্বে হয়তো আপনার চিন্তাতেই আসেনি। তাহলে চলুন বিষয়গুলো জেনে নেয়া যাক-
শুরুতেই টেপের পানি চেক করে নিন
বেশিরভাগ সময় টেপে পানি থাকার কারণে আমরা ধরেই নেই যে টেপে পানি থাকবেই। আর একারণেই মাঝে মাঝে তৈরি হয় বিপত্তিকর অবস্থা। টয়লেটের কাজ শেষ করে যখন টেপ ছাড়তে গেলেন, দেখলেন পানি নেই। কি এক বিধঘুটে অবস্থা! এই বিপত্তিকর ও লজ্জাজনক অবস্থা থেকে বাঁচতে চাইলে প্রতিদিন টয়লেটে ঢুকে প্রথমেই টেপ ছেড়ে পানি দেখে নিতে হবে। আর এটাকে অভ্যাসে পরিণত করে নিলে আপনাকে আর বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হবে না। সুতরাং সাবধান হোন এবং বিষয়টি মাথায় একেবারে গেথে রাখুন।
টয়লেট শুরুর আগে কমোডে পানি ঢেলে নিন
দীর্ঘক্ষণ অব্যবহৃত থাকালে টয়লেটের কমোড সাধারণত শুষ্ক থাকে(তবে এটা হাই কমোডের জন্য প্রযোজ্য নয়)। আর একারণে তাতে প্রথমে পানি ঢেলে না নিলে তাতে মল আঠার মতো লেগে যায়, যা পরিষ্কার করা সময় সাপেক্ষ হয়ে দাড়ায় ।কিন্তু শুরুতেই যদি আপনি পানি ঢেলে নেন তবে কমোড পিচ্ছিল হয়ে যাবে এবং তাতে আর ময়লা লেগে থাকবে না।
দূর্গন্ধ প্রতিরোধে পানির ব্যবহার
ব্যক্তি বিশেষে বা খাবারের প্রেক্ষিতে মাঝে মাঝে মল অতিরিক্ত দূর্গন্ধ ছড়িয়ে থাকে। এতেকরে তা যেমন নিজের কাছে অসুবিধা লাগে, তেমনি পরে টয়লেটে আসা ব্যক্তির জন্যও এটা বিরক্তির কারণ হয়ে দাড়ায়। এই দূর্গন্ধ থেকে নিজে বাঁচতে এবং অপরকে বাঁচাতে সহজ একটি কাজ করুন। মল ত্যাগ করার পর পরই বেশি করে পানি ঢেলে দিন। এতে যেমন নিজে দূর্গন্ধ থেকে বাঁচতে পারবেন, তেমনি অন্যরাও এই দূর্গন্ধ থেকে রক্ষা পাবে।
শব্দ দূষণ প্রতিরোধে পানির ব্যবহার
টয়লেট করতে গেলে অনেক সময় বেশি বেশি বায়ু নির্গত হয় এবং বিশ্রী শব্দ তৈরি হয়, যা নিজের জন্য এবং অপরের জন্য লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই শব্দ প্রতিরোধ করতে প্রতিবার বায়ু নির্গমনের সময় টেপের পানি ছেড়ে দিন। এতে টেপের পানি শব্দ করে পতিত হবে ফলে বায়ু নির্গমনের শব্দ কেউ শুনতে পাবে না।
একটি রোগ প্রতিরোধ করুন
অনেকের উরুর চিপায় ঘা হয়ে থাকে। এর একমাত্র কারণ হলো অপরিষ্কার থাকা। এই ঘা থেকে বাঁচতে এবং উরুর চিপা পরিষ্কার রাখতে প্রতিবার টয়লেট শুরুর পূর্বে প্রথমেই নিম্নাংশ ভিজিয়ে নিন। তারপর টয়লেটের কাজ শেষ করে তা ভালভাবে ঘষামাজা করে ময়লা দূর করে ফেলুন। নিয়মিত এভাবে পরিষ্কার করলে ঘা থেকে রক্ষা পাবেন।
আলাদা একটি তোয়ালে ব্যবহার করুন
টয়লেট শেষে পানি ব্যবহারের পর নিম্নাংশ ভালভাবে না মুছে কাপড় পরিধান করে নিলে নিম্নাংশের কাপড়ের কিছু অংশ ভিজে যায়। এতেকরে নিম্নাংশের কাপড় সহজেই দূর্গন্ধযুক্ত হয়ে পড়ে এবং তাড়াতাড়ি ময়লা হয়ে যায়। তাই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে একটি তোয়ালে বা নেকড়া ব্যবহার করুন। তবে নিশ্চিত করুন তা অবশ্যই পরিষ্কার, নরম এবং শুষ্ক হতে হবে। এরূপ পদক্ষেপ নিলে কাপড় সহজে ময়লাযুক্ত হবে না এবং দূর্গন্ধ ছড়াবে না।
টেপ এবং পাত্র থাকবে সর্বদা ডান পাশে
টয়লেট রুম তৈরি করার সময় অবশ্যই টয়লেটে ব্যবহৃত পানির টেপ ডান পাশে সেট করতে হবে। তাছাড়া ব্যবহৃত বদনা বা পাত্রটিও ডান পাশে রাখতে হবে এবং সর্বদা টেপ এবং পাত্র ডান হাত দিয়ে ধরতে হবে। এতে টেপ এবং পাত্রটি যেমন পরিষ্কার ও শুষ্ক থাকবে, তেমনি রোগ বালাই এবং অপরিচ্ছন্নতা থেকেও রক্ষা পাওয়া যাবে।
ভালভাবে হাত পরিষ্কার করুন
সৌচকর্য শেষ করার পর হাত সাবান দিয়ে ভালভাবে ধৌত করে নিতে হবে। লক্ষনীয় যে, সাবান হাতে মেখে তা যথাযথভাবে পরিষ্কার না করলে সেই সাবানই অসুস্থতার কারণ হয়ে দাড়াতে পারে। তাই হাত থেকে ময়লা ও সাবান দুটোই ভালভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
টয়লেটে ব্যবহৃত পন্স বা স্যান্ডেল
অনেকেই টয়লেটে ব্যবহার করার জন্য ছেড়া বা ক্ষয় হয়ে যাওয়া পন্স ব্যবহার করেন। কিন্ত এটা সঠিক নয়। বিশেষ করে টয়লেটে ব্যবহৃত পন্সটি অতিরিক্ত পাতলা বা ক্ষয় হয়ে গেলে সেই পন্সের ফিতার দুপাশের উচু বটাগুলো পায়ে ব্যথার সৃষ্টি করে। তাছাড়া বার্মিস জাতীয় জুতা ব্যবহার করলে তা সহজে শুকাতে চায় না ফলে তাড়াতাড়ি পিচ্ছিল হয়ে যায়। তাই টয়লেটে ব্যবহৃত পন্সটি হতে হবে নতুন এবং তা সর্বদা শুষ্ক রাখা চাই।
সমাপনী
সম্মানিত পাঠক! লেখাটির যথার্থতা মূল্যায়ন পূবর্বক আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত কমেন্টে জানিয়ে দিতে পারেন। আর কোন কোন বিষয় যুক্ত করা দরকার ছিল সে বিষয়েও পরামর্শ দিবেন। লেখাটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করে রাখতে পারেন। এতেকরে আপনার বন্ধুরাও বিষয়টি জানার সুযোগ পাবে। সবশেষে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে এথানেই শেষ করছি। -আল্লাহ হাফেজ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন