টাকায় কেনা আপদ : বিলাসিতার বিড়ম্বনা
বিলাসিতা বলা যায় সেই সব বস্তুকে যা উপভোগের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কিন্তু আমরা অনেক সময় বিলাসিতার নামে এমন কিছু বস্তু ব্যবহার করে থাকি যেকারণে নিজেকে সমস্যায় ভোগতে হয় এবং লজ্জা পেতে হয়। এগুলোকে কিভাবে বিলাসিতা বলা যায় তা আমার বুধগম্য নয়। কিন্তু তারপরও এরকম বহু বস্তুকে মানুষ বিলাসিতার নামে ব্যবহার করছে আর প্রতিনিয়ত কষ্টে ভোগছে, বিব্রত হচ্ছে বার বার। চলুন দেখে নেয়া যাক কোন কোন বস্তু ব্যবহার করে কী ধরনের সমস্যায় ভোগছে-
কাঁচের পাত্র ও বিড়ম্বনা:
আমরা সাধারণত কাঁচের জগ, মগ, গ্লাস ইত্যাদি বিলাসী বস্তু হিসেবে ব্যবহার করে থাকি বা মেহমান আসলে তাদেরকে উক্ত বস্তুগুলো দ্বারা পানি, শরবত ইত্যাদি পরিবেশন করে থাকি। যদিও এগুলোর সব কয়টিই ঠিক আছে, তবে সমস্যা হলো স্বচ্ছ কাঁচের গ্লাসে, যখন স্বচ্ছ কাঁচের গ্লাসে কেউ পানি পান করে তখন অন্যের কাছে তার মুখের দাঁতগুলো বিকৃত অবস্থায় দৃশ্যমান হয়। যা দেখতে বিরক্তিকর এবং কেউ চায় না যে নিজের এরূপ বিকৃত চেহারা অন্যের সামনে দৃশ্যমান হোক। কিন্তু এরপরও আমরা কাঁচের গ্লাস ক্রয় করছি এবং ব্যবহার করছি। এতে যেমন এর দ্বারা অন্যকে লজ্জায় ফেলছি তেমনি নিজেরাও লজ্জাকর অবস্থায় পতিত হচ্ছি।
জিন্সের প্যান্টঃ
অনেকেই বিলাসিতা বা আধুনিকতার নামে মোটা কাপড়ের আাঁটোসাটো জিন্সের প্যান্ট পরিধান করে থাকে। এই জিন্সের প্যান্ট পড়ে থাকাবস্থায় ভালোভাবে বসা যায় না, প্রস্রাব পাখানার কাজ ভালোভাবে সমাধা করা যায় না এবং পাগুলো ভালোভাবে নেড়ে চেড়ে চলাফেরাও করা যায় না। তারপরও মানুষ এগুলো অন্যজনের দেখাদেখি পরিধান শুরু করে। চিন্তা করে দেখে না যে, টাকায় কেনা জিনিসগুলো সত্যিই শরীরের জন্য আরামদায়ক এবং উপযুক্ত কি-না। কিন্তু আপনি চিন্তা করে দেখলে এর অসুবিধাগুলো আপনি ধরতে পারবেন।
চুস পায়জামাঃ
অনেকেই চুস পায়জামা পছন্দ করে থাকেন। কিন্তু তারা জানেন না যে এটা দেখতে কতটা বেখাপ্পা লাগে। কোন রুচিবোধ সম্পন্ন মানুষ কোন মতেই এই চুস পায়জামা পরিহিতা কোন মহিলাকে সম্মানের চোখে দেখতে পারবেন না। যেখানে একজন মানুষকে দেখতেই উলঙ্গ মত দেখায় সেখানে এটা কেমন রুচি হতে পারে তা আমার মাথায় ধরে না। মেয়েরা যারা এই চুস পায়জামা পরে থাকেন তাদেরকে বলবো আপনার মা যদি এই চুস পায়জামা পরে আপনার সামনে বা অন্য কোন ব্যক্তির সামনে যায় তবে কি আপনি তার মেয়ে বলে নিজে নিজে গর্বিত হবেন? যদি তা না হয় তবে তা পরিধান করায় আপনাকেও অন্যের চোখে খারাপই দেখায়। সুতরাং বিলাসিতা বা আধুনিকতার নামে এসকল লজ্জাজনক পোষাক থেকে বিরত থাকুন। আপনি নিজেকে সম্মান করতে শিখুন, তবেই মানুষ আপনাকে সম্মান করবে।
হাই কমোডের বিড়ম্বনাঃ
অনেকেই বিলাসিতার নামে বাসায় হাই কমোড ব্যবহার করে থাকেন।কিন্তু এই হাই কমোড স্থাস্থ্যের জন্য কতটা ঝুকিপূর্ণ এবং এর ফলে কি পরিমাণ ভোগান্তি পোহাতে হয় তা জানলে হয়তো আপনি আঁতকে উঠবেন।পয়েন্ট আকারে নিম্নে কিছু সমস্যা তুলে ধরা হলো-
শীত ও গরমের কষ্ট: শীতের দিনে হাই কমোড প্রচন্ড রকমের ঠান্ডা হয়ে থাকে। ফলে শীতের দিনে এটাতে বসে প্রাকৃতিক কাজ সম্পাদন করতে গেলে প্রচন্ড ঠান্ডার কষ্টে ভোগতে হয়। আবার গরম দিনেও সমস্যা। গরমের তীব্রতায় যখন হাই কমোড গরম হয়ে থাকে তখন তাতে বসলে শরীরে প্রচন্ড তাপ লাগে। ফলে হাই কমোড ব্যবহার করতে গেলে শীত ও গরম তথা সব সময়ই অসুবিধায় পড়তে হয়।
পানি ছিটে ময়লা লেগে যায়:
হাই কমোডে প্রাকৃতি কার্য সম্পাদন করতে গেলে প্রায়শই পানি ছিটকে শরীরের নিম্নাংশে এবং কাপড় চোপড়ে লেগে যায়। এতে শরীর এবং কাপড় নাপাক ও ময়লাযুক্ত হয়ে পড়ে।
ছোঁয়াচে রোগের প্রাদুর্ভাবঃ
যেহেতু হাই কমোডে শরীর লাগিয়ে বসতে হয়, তাই এর মাধ্যমে একজনের শরীরের রোগ আরেকজনের দেহে সহজেই পরিবাহিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। সুতরাং এদিক থেকেও হাই কমোডের ব্যবহার পরিহার করা জরুরী।
পাইলস্ রোগের কারণঃ
হাই কমোডের সবচেয়ে প্রত্যক্ষ ও ক্ষতির দিকটি হলো- এতে পাইলস রোগের সম্ভাবনা অনেক গুনে বেড়ে যায়। কারন হাই কমোডে ঠেস দিয়ে বসলে পয়ঃনালি থেকে গুহ্যদ্বার কিছুটা বাঁকা হয়ে পড়ে। আর এভাবে প্রতিদিন প্রাকৃতিক কর্ম সম্পাদন করতে থাকলে একসময় পাইলস রোগ সৃষ্টি হয়।
শেষ কথাঃ
সম্মানিত পাঠক! লেখাটির যথার্থতা মূল্যায়ন পূবর্বক আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত কমেন্টে জানিয়ে দিতে পারেন। আর কোন কোন বিষয় যুক্ত করা দরকার ছিল সে বিষয়েও পরামর্শ দিবেন। লেখাটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করে রাখতে পারেন। এতেকরে আপনার বন্ধুরাও জানার সুযোগ পাবে। সবশেষে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে এথানেই শেষ করছি। -আল্লাহ হাফেজ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন