মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫

বিজ্ঞানের উন্নতি যখন প্রকৃতি ধ্বংসের প্রধান হাতিয়ার (১ম কিস্তি)

 


এই পৃথিবীর প্রকৃতি ও পরিবেশ শুরুতে এত উন্নত ও টেকসই ছিল যে আগেকার মানুষেরা হাজার বছর বেঁচে থাকতে পারতো! কিন্তু মানুষ যখন আরো টেকসই এবং আরো সুন্দর ও উপভোগ্য জীবনের আশায় বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় যান্ত্রিক উন্নতি ঘটাতে থাকলো তখন থেকেই পরিবেশ ও প্রকৃতি ধ্বংস হতে শুরু করলো। যদিও যান্ত্রিক উন্নতি ও প্রতিটি গবেষণার ফলে মানুষ তাৎক্ষনিকভাবে কিছুটা লাভবান হয়েছে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে এগুলো পরিবেশ ও প্রকৃতির ভারসাম্য বিনষ্ট করতে একেকটা মহামারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। কিভাবে? চলুন দেখে নেয়া যাক-

চিকিৎসার উদ্ভব ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার প্রবাহমান হ্রাস: ইতিহাস স্বাক্ষী যে, অতীতের মানুষেরা হাজার বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারতো। কিন্তু বর্তমান চিকিৎসার উন্নতি নিয়ে গর্ব করা মানুষদের কাছে কি এই প্রশ্নের উত্তর আছে যে, চিকিৎসা শাস্ত্রের তেমন কোন ব্যবস্থা না থাকার পরও অতীতের মানুষগুলো কিভাবে হাজার বছর বেঁচে থাকতে পারতো? তাছাড়া চিকিৎসা শাস্ত্রের উন্নতির ফলে যেখানে আমাদের আরো দীর্ঘায়ু লাভ করার কথা সেখানে শত বছর বেঁচে থাকাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে! কেন? 

চলুন এর উত্তর খোজার চেষ্টা করি- ডাক্তারগণ বলেন, মানুষের শরীরের মধ্যে রোগ প্রতিরোধী উপাদান রয়েছে। যা শরীর রক্ষায় সৈন্যের মতো কাজ করে। শরীরে কোন জীবাণু প্রবেশ করলে তাকে প্রতিহত করতে যুদ্ধ শুরু করে দেয়।  যখন মানুষ রোগ সারানোর জন্য ঔষধ সেবন করে তখন সে সাময়িকভাবে সেড়ে উঠলেও দীর্ঘ মেয়াদের জন্য তার শরীর একটি বড় দুর্ঘটনায় পতিত হয়। দুর্ঘটনাটি হলো- শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পেতে শুরু করে। যে রোগটি সারানোর জন্য সে ঔষধ সেবন করলো পরবর্তীতে ঐ ঔষধ সেবন ছাড়া সেই রোগ থেকে নিরাময় পাওয়া শরীরের জন্য অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। 

কেননা, এতে শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ব্যাহত হয় এবং সে বুঝে নেয় যে, এই রোগ প্রতিরোধের জন্য সে একাই যথেষ্ট নয়। এজন্য তার আলাদা শক্তি বা সৈন্য প্রয়োজন। তাছাড়া একটি ঔষদের ডোজ কমপ্লিট না হলে সাময়িকভাবে রোগ কমে গেলেও কিছু জীবাণু নিষ্কৃয় অবস্থায় বেঁচে থাকে। তারপর যখন শরীরে ঔষধের কার্যকারিতা শেষ হয়ে যায় তখন সেই জীবাণু সক্রিয় হয়ে উঠে এবং প্রয়োগকৃত ঔষধের বিপরীতে টিকে থাকতে নিজেকে পরিবর্তন করে আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে। 

তারপর ঐ ঔষধে রোগটি সারতে  চায় না। তখন সেই জীবাণুকে ধ্বংস করতে আরেকটু বেশি পাওয়ারের ঔষধের প্রয়োজন হয়.. এভাবে ঔষধের মাত্রা বৃদ্ধি হতে থাকে। আর শরীরের এই সার্বিক অবস্থাটা শীরর তার ডিএনএ’র মধ্যে সঞ্চিত করে রাখে। ফলে মানুষের পরবর্তী প্রজন্ম তথা সন্তানেরাও ডিএনএ’র সেই সঞ্চিত ও পরিবর্তিত রূপ নিয়েই জন্ম লাভ করে। ফলে পরবর্তী প্রজন্মও ঔষধ ছাড়া সেই রোগের প্রতিরোধ করতে পারে না। এভাবেই দিন দিন জীবণু শক্তিশালী হয়ে উঠছে এবং তার প্রতিরোধে আরও শক্তিশালী এন্টিবায়োটিক তৈরি করতে হচ্ছে। 

আর নতুন নতুন এই এন্টিবায়োটিকগুলো মানুষের শরীরের আভ্যন্তরীন ব্যবস্থাকে ক্রমান্বয়ে দূর্বল করে দিচ্ছে। ফলে মানুষের আয়ুষ্কাল দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। আর তাই এক সময় মানুষ হাজার বছর বেঁচে থাকতে পারলেও দিন দিন এই উন্নত চিকিৎসাই গুপ্ত ঘাতকের ন্যায় হিতে বিপরীত ফল বয়ে আনছে।

এই অবস্থা থেকে কি মুক্তির কোন উপায় নেই? উত্তর হলো- আছে। আজ মানুষ গবেষণায় এত উন্নতি করেছে যে, তারা জানতে পারে কোন ভিটামিনের অভাবে কী সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া এটাও জানে যে, কোন খাদে কী উপাদান রয়েছ। তাই ব্যবসায়ী মনমানসিকতা থেকে বের হয়ে এসে পৃথিবী ও মানুষের কল্যাণের চিন্তায় ঔষধকে “সহজে নয়” বলতে হবে। তারপর ঔষধের পরিবর্তে খাদ্য উপানকে সরাসরি গ্রহণের পরামর্শ বা প্রেসক্রিপশন করতে হবে। এতেকরে দিন দিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে থাকবে। আর এভাবেই এক সময় এই সমস্যার মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন