এই পৃথিবীর প্রকৃতি ও পরিবেশ শুরুতে এত উন্নত ও টেকসই ছিল যে আগেকার মানুষেরা হাজার বছর বেঁচে থাকতে পারতো! কিন্তু মানুষ যখন আরো টেকসই এবং আরো সুন্দর ও উপভোগ্য জীবনের আশায় বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় যান্ত্রিক উন্নতি ঘটাতে থাকলো তখন থেকেই পরিবেশ ও প্রকৃতি ধ্বংস হতে শুরু করলো। যদিও যান্ত্রিক উন্নতি ও প্রতিটি গবেষণার ফলে মানুষ তাৎক্ষনিকভাবে কিছুটা লাভবান হয়েছে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে এগুলো পরিবেশ ও প্রকৃতির ভারসাম্য বিনষ্ট করতে একেকটা মহামারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। কিভাবে? চলুন দেখে নেয়া যাক-
কীটনাশক তৈরি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ঃ মানুষ পোকা-মাকড়ের হাত থেকে ফসল রক্ষার নামে তৈরি করেছে বিভিন্ন রকমের কীটনাশক। এতে সাময়িকভাকে পোকার আক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও দীর্ঘমেয়াদী সমস্যায় পতিত হয়েছে প্রকৃতি ও পরিবেশ। যেমন-
নতুন রোগের প্রাদুর্ভাবঃ এই কীটনাশকগুলো মানব শরীরে করে নতুন নতুন জটিল রোগ সৃষ্টি করে। আর এই রোগ সারাতে প্রয়োজন পড়ে নানা ধরনের পাওয়াফুল ঔষধ ও এন্টিবায়োটিকের। আর এগুলো গ্রহনের ফলে শরীরের স্বাভাবিক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ব্যাহত হয়।
মাটির উর্বরতা বিনষ্টঃ কীটনাশকগুলো মাটিতে মেশার ফলে দিন দিন মাটির ঊর্বরতা নষ্ট হচ্ছে।
উপকারী পাখি ও প্রাণীর ধ্বংসঃ নতুন নতুন এই কীটনাশকগুলো ফসলে প্রয়োগ করার কারণে ফসলের পোকা-মাকড়ের শরীর বিষাক্ত হয়ে যায়। আর পাখিরা এগুলো খেয়ে মৃত্যুবরণ করে। তাছাড়া এই কীটনাশক মাটিতে মিশে ফসলের উপকারী কীট-পতঙ্গ ও প্রাণী ধ্বংস হচ্ছে। যেমন- কেচু, ব্যাঙ ইত্যাদি। আবার এগুলো বৃষ্টির পানির সাথে মিশে খাল-বিল এবং নদীতে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে দিনকে দিন মাছ ও পানির জীববৈচিত্র ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
সুতরাং কীটনাশক প্রয়োগ করে সাময়িকভাবে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও এর মাধ্যমে প্রকৃতির অকল্পনীয় ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। সুতারাং এটা নির্দিধায় বালা যায় যে, সাময়িক লাভের তুলনায় ক্ষতির পরিমাণটা আকাশচু্ম্বি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন